চরফ্যাশনে নুসরাত জাহান হাফসা হত্যাকাণ্ড: আত্মহত্যার গল্পে লুকানো লুইচ্চাতান্ত্রিক ঘটনা?
ভোলা প্রতিনিধি:
ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলায় নুসরাত জাহান হাফসা নামের এক গৃহবধূর মৃত্যুকে ঘিরে চলছে তুমুল বিতর্ক। এটি আত্মহত্যা না বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড, তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। স্থানীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যে অভিযোগ উঠেছে, নুসরাতকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা আড়াল করতে এটিকে আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
স্থানীয়দের দাবি, চরফ্যাশনে এ ধরনের ঘটনার পেছনে অসাধু চক্রের প্রভাব রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, ঘটনার তদন্ত ধামাচাপা দিতে থানা প্রশাসনকে মোটা অঙ্কের ঘুষ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী, খুন বা ধর্ষণের ঘটনাগুলো তদন্তের বদলে মীমাংসায় রূপান্তর করতে একটি নির্দিষ্ট "রেট" অনুসরণ করা হয়।
ঘটনার বিবরণ:
রবিবার (১২ জানুয়ারি) রাত ১১টার দিকে চরফ্যাশন পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবের আহমেদের বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। নিহত নুসরাত জাহান হাফসা (২৩) তার স্বামী নজরুল ইসলাম মামুনের স্ত্রী এবং তিন বছর বয়সী একটি সন্তানের মা।
প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় পরিবারের সদস্যরা ঘরের দরজা ভেঙে হাফসার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেন। কিন্তু মরদেহের অবস্থান এবং আঘাতের চিহ্ন দেখে সন্দেহ করা হচ্ছে যে, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
আত্মহত্যার দাবির পেছনে প্রশ্ন:
নুসরাতের স্বামী এবং শ্বশুরপক্ষ কোনো অভিযোগ না করায় পুলিশও ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে আগ্রহ দেখায়নি। থানা পুলিশের প্রাথমিক বক্তব্যে জানানো হয়েছে, অভিযোগ না থাকায় মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, থানা কর্তৃপক্ষকে ঘুষ দেওয়ার কারণে প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা চরফ্যাশনে নতুন নয়।
চরফ্যাশনে ধর্ষণ ও পাচারচক্রের প্রভাব:
অভিযোগ রয়েছে, চরফ্যাশনে সংঘটিত এ ধরনের অপরাধের পেছনে রয়েছে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও পাচারচক্র। নারী ও তরুণীদের নোম্যান্সল্যান্ডে পাচার এবং সেখানে যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
পুলিশের দায়িত্বে প্রশ্ন:
চরফ্যাশন থানার ওসি মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, ঘটনাটি আত্মহত্যা হিসেবে নথিভুক্ত হয়েছে। তবে স্থানীয়দের দাবি, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করা প্রয়োজন।