

নজিরবিহীনভাবে শতাধিক পণ্যের ভ্যাট বৃদ্ধি করল এনবিআর।
উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যেই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নজিরবিহীনভাবে ওষুধ, কাপড়, বিদেশি ফল, মোবাইল রিচার্জসহ শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছে। সংসদ না থাকায় অধ্যাদেশ জারি করে ভ্যাট আইনে এসব পরিবর্তন আনা হয়েছে। কর বাড়ানোর তালিকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ছাড়াও সিগারেট এবং বিমানভ্রমণ সেবার মতো আইটেম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই কর বৃদ্ধির ফলে নির্দিষ্ট আয়ের মানুষের ওপর আর্থিক চাপ আরও বাড়বে।
ওষুধ, খাদ্য ও গৃহস্থালী পণ্য
এনবিআর বছরের মাঝপথে ওষুধের ভ্যাট ২.৪% থেকে বাড়িয়ে ৩% করেছে। এসি রেস্তোরাঁয় খাবারের বিলের ওপর ভ্যাট ৫% থেকে বাড়িয়ে ১৫% করা হয়েছে। বিস্কুট, কেক, আচার, চাটনি এবং টমেটো সস-কেচাপের ভ্যাট তিনগুণ বেড়েছে। এলপি গ্যাসেও ভ্যাট বেড়েছে দুই স্তরে।
অন্যান্য ভ্যাট বৃদ্ধি
বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মার, চশমার প্লাস্টিক ফ্রেম, রিডিং গ্লাস, নারিকেলের ছোবড়া থেকে তৈরি ম্যাট্রেসে ভ্যাট তিনগুণ করা হয়েছে। টিস্যু, সানগ্লাস, নন-এসি আবাসিক হোটেল এবং মিষ্টির ওপর দ্বিগুণ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে।
সেবা খাতে কর বৃদ্ধি
মোটরগাড়ির ওয়ার্কশপ, ছাপাখানা, টেইলারিং শপ, সিনেমা হলসহ ১৪টি সেবার ওপর ভ্যাট ৫% বাড়ানো হয়েছে।
আমদানি পর্যায়ে শুল্ক বৃদ্ধি
আমদানি করা তাজা এবং শুকনা ফল, জুস, রং, সাবান, ডিটারজেন্ট এবং ড্রিংকসের শুল্ক ৫% থেকে ৪০% পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।
সিগারেট ও মোবাইল সেবা
সিগারেটের সম্পূরক শুল্ক ৬৭% করা হয়েছে, যা সব ধরনের সিগারেটের দাম বাড়াবে। মদজাতীয় পণ্যের শুল্ক ১০% বৃদ্ধি পেয়েছে। মোবাইল সেবায় সম্পূরক শুল্ক ৩% বৃদ্ধি পাওয়ায় কথা বলা এবং ইন্টারনেট সেবার খরচ বাড়বে। ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের ওপরও ১০% সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
সাবেক কাস্টমস কমিশনার আব্দুল কাফি মন্তব্য করেছেন, বাজেটের মধ্যবর্তী সময়ে এমন উচ্চ হারে কর বৃদ্ধি জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। ১৩% মূল্যস্ফীতির মধ্যে এ ধরনের ভ্যাট ও শুল্ক বাড়ানো উচিত হয়নি বলে তিনি মত দেন। তিনি আরও বলেন, পণ্য ও সেবা একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত। ফলে এই কর বৃদ্ধির বাজারে সরাসরি প্রভাব পড়বে, যা সাধারণ মানুষের জন্য ভোগান্তি বাড়াবে।
এছাড়া ভ্যাট নিবন্ধন শর্তেও পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা ব্যবসায়ী মহলে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।