ভোলার লুইচ্ছাতন্ত্রের অবসান এবং মতিন দেওয়ানের খুনের ন্যায্য বিচারের দাবি
মোঃ আবুল কাশেম, জেলা প্রতিনিধি, ভোলা, বাংলাদেশ।
গত ৭ জানুয়ারি ২০২৫, মঙ্গলবার গভীর রাতে ভোলা জেলার চরফ্যাসন উপজেলার শশীভূষণ থানার এওয়াজপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। লুইচ্ছাতন্ত্রের চীফ মোস্তফা দেওয়ানের ভাই, মতিন দেওয়ানের লাশ উদ্ধার করা হয়। বাড়ির পাশে ছালাউদ্দিনের পানের বরজে তার মৃতদেহ পাওয়া যায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত মতিন দেওয়ান (৬০) পেশায় পানচাষী ছিলেন। তিনি মৃত জালাল দেওয়ানের ছেলে। পরিবারের ভাষ্যমতে, সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হলে অনেক খোঁজাখুঁজির পর রাত ২টায় বরজে তার মরদেহ দেখতে পায় তার ছেলে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা জেলা সদর হাসপাতালে পাঠায়।
স্থানীয়দের মতে, ঘটনাস্থলের আশেপাশে দীর্ঘদিন ধরে অপরাধমূলক কার্যক্রম চলছিল। বরজের কাছাকাছি এলাকায় রাতের আঁধারে মাদক সেবন, জুয়া খেলা, এবং নারী পাচারসহ নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ড সংগঠিত হতো। অভিযোগ উঠেছে, মতিন দেওয়ান এসব কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করায় শত্রুতা তৈরি হয়।
অন্যদিকে, এলাকায় বিরাজমান তিনটি প্রতিদ্বন্দ্বী লুইচ্ছা গ্যাংয়ের মধ্যে সম্পত্তি ও অপরাধ ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে অনেকে মনে করেন। বিশেষ করে রফিক কয়াল গ্যাংয়ের সদস্যদের গতিবিধি সন্দেহজনক বলে স্থানীয়রা জানায়।
শশীভূষণ থানার ওসি তারিক হাসান রাসেল জানিয়েছেন, মরদেহে চোখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অন্যান্য আঘাতের চিহ্ন এবং মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে মরদেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে।
ভোলা জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোঃ মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে এটি একটি খুনের ঘটনা বলে মনে হচ্ছে। তবে ভিসেরা পরীক্ষার মাধ্যমে বিস্তারিত জানা যাবে।
এলাকায় রাজনীতির মোড় নেওয়া বিভিন্ন গোষ্ঠী ইতোমধ্যেই এ হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে নিজেদের স্বার্থে মামলা পরিচালনার চেষ্টা করছে। খুনের আসল কারণ উদঘাটনের জন্য ন্যায়সঙ্গত তদন্তের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা।
এ ঘটনার পর এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে এবং সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের উপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রকৃত অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি উঠেছে। এলাকাবাসী ও সচেতন মহলের মতে, লুইচ্ছাতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে আইনশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠাই এখন সময়ের দাবি।