
বেসরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের পুলিশের ‘অক্সিলারি ফোর্স’ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে: ডিএমপি কমিশনার
ঈদের আগে পুলিশের জনবল স্বল্পতা মেটাতে ৫০০ জন বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মীকে ‘সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা’ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
পুলিশের জনবল সংকট নিরসনে এবং ঈদের সময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বেসরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ‘অক্সিলারি ফোর্স’ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।
রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।
৫০০ জন নিয়োগের প্রক্রিয়া
ডিএমপি কমিশনার জানান, পুলিশের সহায়ক হিসেবে ৫০০ জন নিরাপত্তাকর্মীকে নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। তিনি বলেন, ‘মেট্রোপলিটন পুলিশের আইনের আওতায় আমার ক্ষমতা রয়েছে অক্সিলারি পুলিশ ফোর্স নিয়োগ দেওয়ার। তাই আমরা বেসরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ দিচ্ছি।’
রমজান ও ঈদে নিরাপত্তা ব্যবস্থা
ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘রমজানের সময় অনেক রাত পর্যন্ত শপিং মল খোলা থাকে, ফলে অতিরিক্ত নিরাপত্তার প্রয়োজন হয়। আমাদের পুলিশের সংখ্যা সীমিত হওয়ায় বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মীদের সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের হাতে একটি ব্যান্ড থাকবে, যেখানে লেখা থাকবে “সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা”। আইন অনুযায়ী, তাঁরা পুলিশের মতোই দায়িত্ব পালন করবেন এবং গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা পাবেন।’
পুলিশের মতোই দায়িত্ব ও সুরক্ষা
ডিএমপি কমিশনার স্পষ্ট করে বলেন, ‘এই সদস্যরা পুলিশের মতোই দায়িত্ব পালন করবেন এবং একই ধরনের আইনি সুরক্ষা পাবেন। তাঁরা যেকোনো অপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে পারবেন এবং পুলিশ অফিসারদের মতোই দায়িত্ব পালন করবেন।’
জননিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা
ডিএমপি কমিশনার মব জাস্টিসের ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছাড়া কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর অভিযান পরিচালনার অধিকার নেই। কোনো বাড়ি বা অফিসে অভিযান চালিয়ে লুটপাট করা সম্পূর্ণ বেআইনি। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
হিযবুত তাহ্রীর ও গোয়েন্দা কার্যক্রম
ডিএমপি কমিশনার জানান, হিযবুত তাহ্রীরের পোস্টারিং সম্পর্কে তাদের কাছে তথ্য নেই। তবে এ পর্যন্ত ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির বিষয়ে সতর্কতা
সংবাদকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘একটি ঘটনা বারবার প্রচার হলে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বনশ্রী ডাকাতির ঘটনা অত্যধিক ভাইরাল হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে। তাই সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ থাকবে, সংবাদের ব্যালান্স রাখতে এবং অযথা আতঙ্ক না ছড়াতে।’
ডিএমপি কমিশনারের মতে, সাংবাদিকতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লক্ষ্য অভিন্ন—নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।