

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানসহ বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজনৈতিক অঙ্গনের ১৩ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা আবেদন করেছেন গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান।
রোববার দুপুরে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ খালিদ মনসুরের কাছে তিনি লিখিত অভিযোগ জমা দেন। পরে সাংবাদিকদের সামনে তিনি জানান, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময়কার নির্যাতনের বিচার দাবি করেই এই মামলা করছেন তিনি।
রাশেদ খানের ভাষ্য অনুযায়ী, সে সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কথিত কটূক্তি ও উপাচার্যের বাসভবনে হামলার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি ১৫ দিন রিমান্ড ও ৩ দিন পুলিশ হেফাজতে থাকাকালে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেন। এ ঘটনার তদন্ত ও বিচার চেয়েই এ মামলা আবেদন করছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, “প্রশ্ন উঠতে পারে, সাত বছর পরে কেন মামলা? এর উত্তরে বলব, অতীতে ফ্যাসিবাদি শাসনামলে আমাদের কণ্ঠরোধ করা হয়েছিল, পুলিশ মামলা নেয়নি। এখন যখন রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ঘটেছে, তখন আমরা সুবিচারের আশায় আইনের দ্বারস্থ হয়েছি।”
রাশেদ খান অভিযোগ করেন, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের কক্ষে হামলার ঘটনায়ও পুলিশ নিরপেক্ষভাবে মামলা নেয়নি বরং নিজেদের মতো করে মামলা তৈরি করে। এই ঘটনায় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের নাম থাকলেও সেটি উপেক্ষা করা হয়েছে।
যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন:
লিখিত অভিযোগে নাম উল্লেখ করা ব্যক্তিরা হলেন—আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন, ঢাবি শাখার সাবেক সভাপতি আবিদ আল হাসান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স, ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় (পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় সভাপতি), ছাত্রলীগ ঢাকা কলেজ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাকিব হাসান সুইম, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সভাপতি মেহেদী হাসান, ঢাবি শিক্ষক সমিতির তৎকালীন সভাপতি অধ্যাপক মাকসুদ কামাল (পরবর্তীতে উপাচার্য) এবং সাবেক সহ-উপাচার্য অধ্যাপক আবদুস সামাদ।
এছাড়াও, অভিযোগে ছাত্রলীগের অজ্ঞাতনামা প্রায় ৫০০ জন নেতা-কর্মীকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে।
গণ অধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, অভিযুক্তদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে। রাজনৈতিক পালাবদলের এই মুহূর্তে ২০১৮ সালের ঘটনার সঠিক তদন্ত ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন রাশেদ খান।