প্রত্যাশিত দাম না পেয়ে হতাশ গরুর মালিক, শেষ পর্যন্ত কম দামে বিক্রি করলেন
রাজশাহী প্রতিনিধি:
গরুর খাবার ও পরিচর্যায় প্রচুর খরচ হলেও প্রত্যাশিত দাম না পেয়ে হতাশ গরুর মালিক। রাজশাহীর সিটি হাটে প্রায় ২০ মণ ওজনের একটি গরু নিয়ে এসেছিলেন নওগাঁর মান্দা উপজেলার কালিগ্রামের বাসিন্দা সারফিন শাহ। কোরবানির ঈদে ৬ লাখ টাকা দাম পাওয়ার আশা করেছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত মাত্র ৩ লাখ ৭৮ হাজার টাকায় গরুটি বিক্রি করতে বাধ্য হন।
সারফিন শাহ গত কোরবানির ঈদে তার গরুর জন্য ৪ লাখ টাকার দর পেয়েছিলেন। কিন্তু আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় গরু বিক্রি করেননি। আশা করেছিলেন পরবর্তীতে ভালো দাম পাবেন। তবে, খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ায় ও গরুর ভার বইতে না পারায় তিনি এবার গরুটিকে হাটে নিয়ে আসেন।
গতকাল রোববার সকাল ৯টায় রাজশাহী নগরের সিটি হাটে গরুটি আনা হয়। কিন্তু দুপুর পর্যন্ত কেউ ভালো দাম বলছিল না। শেষ পর্যন্ত সিলেটের ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম ৩ লাখ ৭৮ হাজার টাকা দিয়ে গরুটি কিনে নেন।
সারফিন শাহ জানান, এই গরুর পেছনে প্রতি মাসে প্রায় ৬ হাজার টাকা খরচ হতো। এছাড়া সারাদিন একজন মানুষকে পরিচর্যায় ব্যস্ত থাকতে হতো। এত কষ্ট করে গরু লালন-পালন করেও আশানুরূপ দাম পাননি তিনি। হতাশ হয়ে তিনি বলেন,
"একটা বড় গরু পালার শখ ছিল, আমার সেই শখ মিট্যা গ্যাছে। এরম আহাম্মুকি আর করব না। আমি মাছ চাষ করি। মাছের খামারে গোবর লাগে। বইলতে গেলে এই গরু পাইল্যা আমার গোবরটাই লাভ হইচে।"
গরুর বাজারে প্রচুর আমদানি হলেও ব্যবসায়ীদের নজর বেশি ছিল মহিষের দিকে। বড় গরু বিক্রির জন্য সাধারণত কোরবানির ঈদের সময় ভালো সুযোগ থাকে। একজন ক্রেতা জানান, বড় গরুর দাম বেশি পেতে হলে কোরবানির বাজারেই তুলতে হয়, কারণ অনেক শিল্পপতি বড় গরু সৌন্দর্য দেখে বেশি দাম দেন।
তবে নতুন মালিক সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, গরুটি তিনি কোরবানির ঈদ পর্যন্ত রাখবেন না, বরং শবে বরাতের সময় ঢাকার কোনো বাজারে জবাই করবেন।
গরুটি বিক্রি করতে সারফিন শাহর সঙ্গে এসেছিলেন তার বড় ভাই জাহাঙ্গীর শাহ। গরু বিক্রির পর তিনি হাস্যরস করে বলেন,
"আমাদের গরু বেচে দড়ি খালাস করা হলো আরকি।"
রাজশাহীর বাজারে বড় গরুর চাহিদা কম থাকায় গরুর মালিকদের এমন ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।