
ইতালিতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে লিবিয়ায় নিখোঁজ ২৪ যুবক-যুবক: পরিবারের অনশন ও দালাল চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর দাবি
শরীয়তপুর ও মাদারীপুরের ২৪ তরুণ অবৈধভাবে লিবিয়ায় চলে যাওয়ার পর নিখোঁজ হওয়ায় পরিবারের অনশনে আদালতে ন্যায়বিচারের দাবিতে তৎপর।
শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকার ২৪ যুবক-যুবক ইতালিতে যাওয়ার আশায় বাড়ি ছাড়েন। তবে, অবৈধভাবে লিবিয়ায় প্রেরণের কুৎসিত চক্রান্তের ফাঁদে পড়ে তাঁরা হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান। নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেলে, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো আদালতের চত্বরে অনশন করে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছে।
২০২২ ও ২০২৩ সালের মধ্যে শরীয়তপুর সদরসহ মাদারীপুরের বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে ২৪ তরুণকে অবৈধ পথে পাঠানোর জন্য বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রথমে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিসর হয়ে লিবিয়ায় প্রেরণের পর যুবকদের হঠাৎ দেখা মিলছে না। এ কুৎসিত কর্মকাণ্ডে দালাল চক্রটি পরিবারের কাছ থেকে ১২ থেকে ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে, যার মধ্যে কিছু তরুণকে দু’বার গ্রেপ্তারের পাশাপাশি নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে।
পুলিশ নিখোঁজ মামলার এক শাখায় মাদারীপুরের সূর্যমণি এলাকার মামলায় রাশেদ খান নামে একজন দালালকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে চিহ্নিত করেছে। শরীয়তপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাঁকে হাজির করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ জারি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত স্বজনেরা রাশেদ খান ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই ১১টি মামলা দায়ের করেছে।
একদিকে, পরিবারের একজন ক্ষতিগ্রস্ত নারী জানায়, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাঁর স্বামী ইতালিতে যাবার উদ্দেশ্যে রাশেদের সঙ্গে বাড়ি ছাড়েন। পরে ফোনে জানতে পান, সমুদ্রপথে অবৈধভাবে লিবিয়া থেকে ইতালি পাঠানো হবে – কিন্তু এরপর তাঁকে আর কোনো যোগাযোগ পাওয়া যায়নি। অপরদিকে, আরেক স্বজন নিজের ছোট ভাই দিদার হোসেনের সন্ধানে অনশনে বসেন, যাকে অবৈধভাবে পাঠানোর চেষ্টা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন।
অপরাধ তদন্ত বিভাগের অভিযানে রাশেদ খানকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ তদন্ত চালিয়ে রয়েছে, আর ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো ন্যায়বিচারের প্রত্যাশায় তাদের অনশন অব্যাহত রেখেছে।