
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বেগম খালেদা জিয়াসহ সবাইকে খালাস
হাইকোর্টের রায় বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজা বাড়িয়ে হাইকোর্টের দেয়া ১০ বছরের কারাদণ্ড বাতিল করে বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সবাইকে খালাস দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
আজ (১৫ জানুয়ারি, ২০২৫) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ সর্বসম্মতভাবে এই রায় দেন। বিচারিক আদালত ও হাইকোর্টের রায় বাতিল করে এ রায় ঘোষণা করা হয়।
মামলার পেছনের ইতিহাস:
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন। একই মামলায় তার ছেলে তারেক রহমানসহ আরও চারজনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। পরে, ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট এই সাজা পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেন।
রায়ের যুক্তি:
বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবীরা আপিল শুনানিতে যুক্তি দেন, “মামলাটিতে কোনো সুনির্দিষ্ট নথি উপস্থাপন করা হয়নি যা দেখাতে পারে খালেদা জিয়া কোনো অনিয়ম বা আত্মসাতে জড়িত ছিলেন। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের যে অর্থ আত্মসাতের কথা বলা হয়েছে, তা ব্যাংকে সুরক্ষিত আছে এবং কোনো ব্যয়ের প্রমাণ নেই। এটি একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা।”
অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষ এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবীরা মামলাটি আইনি ভিত্তিতে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেন।
রাষ্ট্রপতির ক্ষমা ও খালাস:
রাষ্ট্রপতি শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করেন। তবে, বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়ে জানান, তিনি আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমেই নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে চান।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া:
এই রায় দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিএনপির নেতারা এটিকে ন্যায়বিচারের জয় হিসেবে দেখছেন।
এই রায়ের পর, দেশের বিচারব্যবস্থা এবং রাজনৈতিক পরিবেশে নতুন আশার সঞ্চার করেছে।