সংবিধানে মুক্তিযুদ্ধের মর্যাদা খাটো করার প্রচেষ্টা বরদাশত নয়: বাংলাদেশ জাসদের স্পষ্ট বার্তা
২০২৪ সালের গণ–অভ্যুত্থান গুরুত্বপূর্ণ হলেও মুক্তিযুদ্ধের মর্যাদার সঙ্গে তুলনা অযৌক্তিক বলছে জাসদ
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা:
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের গৌরব ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব কোনোভাবেই খাটো করা যাবে না—এই স্পষ্ট অবস্থান জানিয়েছে বাংলাদেশ জাসদ। সংবিধানে ২০২৪ সালের গণ–অভ্যুত্থানকে মুক্তিযুদ্ধের সমপর্যায়ে বিবেচনার যে চেষ্টা চলছে, তা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে দলটি। শনিবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে এ বক্তব্য তুলে ধরে জাসদ।
দলের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধানের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল বৈঠকে অংশ নেয়। আলোচনার শুরুতে জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য মুশতাক হোসেন সংবিধান সংক্রান্ত প্রস্তাবনার সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধ ছিল জাতির স্বাধীনতার ভিত্তি, তাকে খাটো করার কোনো প্রস্তাবই গ্রহণযোগ্য নয়। ২০২৪ বা নব্বইয়ের গণ–অভ্যুত্থান ঐতিহাসিক হলেও তাদের গুরুত্ব আলাদা।”
তিনি আরও বলেন, সংবিধান থেকে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র ও বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বাদ দেওয়ার বিষয়ে তারা একেবারেই একমত নন। একইসঙ্গে দেশের নাম বাংলাতে পরিবর্তনের প্রস্তাবকেও অপ্রয়োজনীয় বলে আখ্যায়িত করেন।
আলোচনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া হলেও এটি মূলত জনগণের দাবি।” তিনি জানান, মে মাসের মাঝামাঝি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা শেষ করে দ্বিতীয় ধাপ শুরু করতে চায় কমিশন। এই ধারাবাহিকতায় একটি কার্যকর ও সর্বজনগ্রাহ্য রাষ্ট্র সংস্কারের রূপরেখা পাওয়া যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ইফতেখারুজ্জামান, বদিউল আলম মজুমদার ও অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
বাংলাদেশ জাসদের প্রতিনিধি দলে ছিলেন ইন্দু নন্দ দত্ত, এ টি এম মহব্বত আলী, মুশতাক হোসেনসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারা।