

ভারতের পরিকল্পিত ‘অপারেশন সিঁদুর’ এর আওতায় মাত্র ২৫ মিনিটেই পাকিস্তানের অভ্যন্তরে থাকা ৯টি সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়েছে। বুধবার ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, এই প্রতিক্রিয়ামূলক হামলা ছিল সুপরিকল্পিত, দায়িত্বশীল এবং সীমিত পরিসরে।
তিনি বলেন, পেহেলগামে যে নৃশংস হামলা চালানো হয়েছিল, তার পরিণতিতে ভারতের এই প্রতিরোধ ছিল জরুরি। সীমান্তপারের সম্ভাব্য আরও হামলা রুখে দেওয়ার পাশাপাশি জঙ্গি অবকাঠামো ধ্বংস করাই ছিল এই অভিযানের মূল লক্ষ্য।
ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ও বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং। তারা জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টা ৫ মিনিট থেকে ১টা ৩০ মিনিটের মধ্যেই পুরো অভিযান সম্পন্ন হয়। ভারতের বাহিনী নিয়ন্ত্রণরেখা ও আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে সুনির্দিষ্ট টার্গেটগুলোতে প্রযুক্তিনির্ভর আক্রমণ চালায়।
অভিযানের সময় পাকিস্তানি সেনাঘাঁটি বা সাধারণ মানুষকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়নি বলে জানান তারা। প্রথম আঘাত হানা হয় ভাওয়ালপুরের মারকাজ শুবহান আল্লাহ্ এলাকায়, যেখানে জইশ–ই–মহম্মদের প্রশিক্ষণ শিবির ছিল। এরপর হামলা হয় বিলাল মসজিদে লস্কর–ই–তাইয়েবার ঘাঁটি ও কোটলির জঙ্গি অবস্থানে, যেটি পুঞ্চ এলাকায় সক্রিয় ছিল।
সেনা কর্মকর্তারা আরও জানান, পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ৬ কিলোমিটার ভেতরে অবস্থিত শিয়ালকোটের সার্জাল ক্যাম্পেও হামলা চালানো হয়। সেইসঙ্গে হিজবুলের শিবির মেহমুনা জোয়া ক্যাম্প এবং ২৬/১১ মুম্বাই হামলায় অভিযুক্তদের প্রশিক্ষণকেন্দ্র লাহোরের মুরিদকের মারকাজ তৈয়্যেবা ধ্বংস করা হয়।
পররাষ্ট্রসচিব মিশ্রি জানান, পেহেলগামে হামলার মাধ্যমে কাশ্মীরের শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে পর্যটন ও অর্থনীতি ভেঙে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল। পাশাপাশি দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করাও ছিল হামলাকারীদের উদ্দেশ্য।
তিনি আরও জানান, এই হামলার দায় স্বীকার করেছিল টিআরএফ নামের একটি সংগঠন, যা জাতিসংঘে নিষিদ্ধ ঘোষিত লস্কর-ই-তাইয়েবার একটি শাখা। জাতিসংঘে ইতোমধ্যেই এদের বিরুদ্ধে ভারত প্রমাণসহ অভিযোগ পেশ করেছে।
ভারতের এই প্রতিক্রিয়া একদিকে আন্তর্জাতিক সমর্থন পাওয়ার পথ প্রশস্ত করেছে, অন্যদিকে প্রতিবেশী অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদ দমনেও একটি শক্ত বার্তা দিয়েছে।