
খুলনা সিটি কাউন্সিলর গোলাম রব্বানীকে হত্যা ছিল পরিকল্পিত
আরেক কাউন্সিলরের সঙ্গে কক্সবাজারে যান গোলাম রব্বানী, হত্যাকাণ্ডটি ‘পরিকল্পিত’ ছিল।
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে সদ্য অপসারিত খুলনা সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর গোলাম রব্বানীকে মাথায় গুলি করে হত্যার ঘটনাটি পরিকল্পিত বলে জানিয়েছে র্যাব। এই ঘটনায় খুলনা সিটি করপোরেশনের আরেক অপসারিত কাউন্সিলর শেখ হাসান ইফতেখার এবং কক্সবাজারের এক স্থানীয় বাসিন্দা মেজবাউল হক ওরফে ভুট্টুকে আটক করা হয়েছে। শেখ হাসান ইফতেখার ও গোলাম রব্বানী কক্সবাজারের একটি হোটেলে একই সঙ্গে অবস্থান করছিলেন।
গত বৃহস্পতিবার রাতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের সিগাল পয়েন্টে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। গোলাম রব্বানী ছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি। সম্প্রতি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে তাঁর কাউন্সিলর পদ বাতিল করা হয়। আটক শেখ হাসান ইফতেখার খুলনার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা যায়, ঢাকা থেকে একসঙ্গে কক্সবাজারে আসেন রব্বানী ও ইফতেখার। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁরা হোটেল গোল্ডেন হিলে উঠেছিলেন। হত্যার পর একটি নারী সঙ্গীর সন্ধান মিলেছে, যিনি গোলাম রব্বানীর সঙ্গে ছিলেন বলে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়। ঘটনার পর থেকে ওই নারী পলাতক, যা রহস্য উদঘাটনে বড় প্রতিবন্ধক বলে জানিয়েছে র্যাব।
র্যাবের কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, গোলাম রব্বানীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী, সন্ধ্যা ৬টা ৩১ মিনিটে রব্বানী এবং এক নারী হোটেল থেকে বেরিয়ে যান। রাত সাড়ে ৮টার দিকে সমুদ্রসৈকতের একটি কাঠের সেতুতে গোলাম রব্বানীকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
হত্যার ঘটনায় নিহতের ভগ্নিপতি মো. ইউনুস আলী সেখ কক্সবাজার সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, কক্সবাজারে গোলাম রব্বানীর চিংড়ি ঘের ছিল। ঘটনার রাতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা রব্বানীকে গুলি করে পালিয়ে যায়।
কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইলিয়াস খান জানান, হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। তবে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মামলার বাদী মো. ইউনুস আলী সেখ বলেন, রব্বানীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে একাধিক মামলা ছিল। তবে হত্যাকাণ্ডের পেছনে শেখ হাসান ইফতেখারের সঙ্গে কোনো বিরোধ ছিল কি না, তা জানা যায়নি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে প্রকৃত খুনিকে চিহ্নিত করার প্রত্যাশা রয়েছে পরিবারের। নিহত রব্বানীর স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।