হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প ও মোদির ঐক্যবদ্ধ বার্তা, বাণিজ্য বিরোধ পেছনে

The short URL of the present article is: https://bangavumi.com/19ha

হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প ও মোদির ঐক্যবদ্ধ বার্তা, বাণিজ্য বিরোধ পেছনে

যুক্তরাষ্ট্র-ভারতের মধ্যে বাণিজ্য ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদারে একমত ট্রাম্প ও মোদি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন, যেখানে তারা দুই দেশের সম্পর্ক জোরদারের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। যদিও এর কিছুক্ষণ আগেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারতসহ বিভিন্ন দেশের বিরুদ্ধে নতুন “পারস্পরিক” শুল্ক আরোপের নির্দেশ দেন, যা দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্কে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

মোদি-ট্রাম্পের উষ্ণ সম্পর্ক

বৈঠকে মোদি ট্রাম্পের প্রতি আন্তরিকতা দেখান এবং তাঁর জনপ্রিয় স্লোগান “Make America Great Again” ব্যবহার করে বলেন, “Make India Great Again”। মোদি জানান, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যকে ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০০ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যেতে চান এবং শিগগিরই একটি পারস্পরিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের আশা করেন।

এছাড়া, মোদি ও ট্রাম্প দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার পরবর্তী দশকের জন্য একটি কাঠামো গঠনের সিদ্ধান্ত নেন। পাশাপাশি, আধুনিক প্রযুক্তি খাতে—সেমিকন্ডাক্টর, কোয়ান্টাম টেকনোলজি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) ক্ষেত্রে যৌথ গবেষণার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

বাণিজ্য ও অভিবাসন নিয়ে বিতর্কিত প্রসঙ্গ

বৈঠকের আগে ট্রাম্প জানান যে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলার, যদিও প্রকৃত সংখ্যা প্রায় ৫০ বিলিয়ন। তিনি বলেন, “যে পরিমাণ শুল্ক ভারত আরোপ করবে, আমরা ঠিক ততটাই আরোপ করব। এটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্যও এবং ভারতের জন্যও ন্যায়সঙ্গত।”

অন্যদিকে, মোদিকে প্রশ্ন করা হয় যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতে ফেরত পাঠানো একদল ভারতীয় অভিবাসনপ্রত্যাশী নিয়ে, যারা হাতকড়া পরিহিত অবস্থায় বিমানে ছিলেন। বিষয়টি ভারতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল, তবে মোদি এই প্রসঙ্গে কোনো অসন্তোষ প্রকাশ না করে বলেন, “যে কেউ অবৈধভাবে অন্য দেশে প্রবেশ করলে, তাদের সেই দেশে থাকার কোনো অধিকার নেই।”

ইলন মাস্ক ও মোদির বৈঠক

ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের আগে মোদি ইলন মাস্কের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। মাস্ক, যিনি বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি, স্টারলিংকসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানির মাধ্যমে ভারতে ব্যবসার সুযোগ তৈরি করতে চান। মোদি ও মাস্কের বৈঠকে মাস্কের উপদেষ্টা শিভন জিলিস এবং তার তিন সন্তান উপস্থিত ছিলেন।

মোদির সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে মাস্ককে আমেরিকার পতাকার সামনে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বসে থাকতে দেখা যায়, যা সাধারণত রাষ্ট্রপ্রধানদের জন্য সংরক্ষিত একটি মর্যাদাপূর্ণ ভঙ্গি।

ট্রাম্পের বৈদেশিক নীতি ও পরবর্তী পরিকল্পনা

ট্রাম্প সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে দ্রুত পরপর চারটি বিদেশি নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন, যার মধ্যে ইসরায়েল, জাপান ও জর্ডানের নেতারা অন্তর্ভুক্ত। এটি তার সম্প্রসারণমূলক বৈদেশিক নীতির প্রতিফলন, যেখানে তিনি অন্যান্য দেশগুলোর কাছ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক খরচের ক্ষতিপূরণ আদায়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এ বৈঠক স্পষ্ট করে দেয় যে, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র পারস্পরিক সহযোগিতার প্রতি আগ্রহী হলেও বাণিজ্য ও অভিবাসন ইস্যুতে দ্বন্দ্ব রয়েই গেছে। তবে উভয় পক্ষই ভবিষ্যতের অংশীদারিত্ব আরও শক্তিশালী করতে আগ্রহী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from DALY BANGAVUMI

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading