
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের জরিপ
৬৬% নাগরিকের অভিযোগ: সরকারি কর্মচারীরা শাসকের মতো আচরণ করেন
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের জরিপে উঠে এসেছে দুর্নীতি, অসৌজন্যমূলক আচরণ ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের চিত্র
বিশেষ প্রতিবেদক
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের এক জরিপে দেখা গেছে, ৬৬ শতাংশের বেশি নাগরিক মনে করেন সরকারি কর্মচারীরা নাগরিকদের সঙ্গে শাসকের মতো আচরণ করেন। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৩১% বলেছেন, সরকারি কর্মচারীরা অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন, ৫২% মনে করেন ঘুষ ছাড়া সেবা পাওয়া যায় না এবং ৪৬% নাগরিক জানিয়েছেন, তাঁরা সেবা নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হন।
জরিপের মূল তথ্য:
- ৮৪% নাগরিকের মতে, জনপ্রশাসনে সংস্কার প্রয়োজন।
- ৮০% মনে করেন, বর্তমান প্রশাসন জনবান্ধব নয়।
- ৬৯% নাগরিকের ধারণা, গত ১৫ বছরে প্রশাসনে নিরপেক্ষতার অভাব ছিল।
- ৫৬% মনে করেন, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ জনপ্রশাসনকে জনবান্ধব করার পথে প্রধান বাধা।
- ৪২% মনে করেন, দুর্নীতি প্রশাসনের প্রধান সমস্যা।
- ৯৬% নাগরিকের অভিজ্ঞতা, প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাব রয়েছে।
সরকারকে সংস্কারের আহ্বান
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাগরিকদের মতামতের ভিত্তিতে জরিপটি পরিচালিত হয়েছে। ১ লাখ ৫ হাজার নাগরিক এতে অংশ নেন। অংশগ্রহণকারীদের ৫২% মনে করেন, জনপ্রশাসনে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করাই সংস্কারের মূল কাজ। আর ৩৬% মনে করেন, দুর্নীতি দূর করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
প্রতিবেদন প্রকাশ ও সরকারের প্রতিক্রিয়া
গতকাল শনিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এর আগে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এই প্রতিবেদন জমা দেন কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী।
প্রতিবেদনে জনপ্রশাসন ও শাসনব্যবস্থায় বড় ধরনের সংস্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। প্রশাসনকে জনবান্ধব করতে হলে ঘুষ, দুর্নীতি ও রাজনৈতিক প্রভাব কমানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
জনপ্রশাসনের ভবিষ্যৎ কী?
এই জরিপের ফলাফল দেখিয়ে দিচ্ছে যে দেশের নাগরিকরা জনপ্রশাসনে বড় পরিবর্তন চান। এখন দেখার বিষয়, সরকার কী পদক্ষেপ নেয় এবং জনগণের প্রত্যাশা কতটা পূরণ হয়।