

দীর্ঘ ১৭ বছরের প্রবাসজীবন শেষে অবশেষে দেশে ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় ছেলের স্ত্রী, জুবাইদা রহমান। মঙ্গলবার সকালে কাতারের রাজপরিবারের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তিনি, সঙ্গে ছিলেন খালেদা জিয়া ও পরিবারের অন্য সদস্যরা।
খালেদা জিয়ার পাশে দেখা যায় তাঁর দুই পুত্রবধূ জুবাইদা রহমান ও সৈয়দা শামিলা রহমানকে। বিমানের দরজা খোলার পরই সবার নজর কাড়েন হাস্যোজ্জ্বল জুবাইদা, যিনি ২০০৮ সাল থেকে লন্ডনে স্বামী তারেক রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমানের সঙ্গে অবস্থান করছিলেন।
দেশে ফিরেই বাবার বাড়ি ধানমন্ডির মাহবুব ভবনে ওঠার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন জুবাইদা। তাঁর স্বাচ্ছন্দ্য ও নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে বাড়িটিকে ইতোমধ্যেই সাজিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে।
২০০৮ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তারেক রহমান, জুবাইদা ও তাঁর মায়ের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে। সেই মামলায় ঢাকার একটি আদালত জুবাইদাকে তিন বছরের কারাদণ্ড ও ৩৫ লাখ টাকা জরিমানা করেন। তবে ২০২৪ সালের আগস্টে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিচারিক আদালতের দেওয়া শাস্তি স্থগিত করা হয়।
জুবাইদা রহমানের শিক্ষাজীবনও যথেষ্ট কৃতিত্বপূর্ণ। ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস শেষ করে লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজ থেকে মেডিসিনে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। বিসিএস পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করে ১৯৯৫ সালে সরকারি চিকিৎসক হিসেবে যোগ দেন। কিন্তু লন্ডনে শিক্ষা ছুটিতে গিয়ে ফেরত না আসায় পরে তাঁকে বরখাস্ত করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
সিলেটের সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম নেওয়া জুবাইদা প্রয়াত রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলীর কন্যা। তাঁর চাচা ছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রধান সেনাপতি জেনারেল এম এ জি ওসমানী। তাঁর পিতাও ছিলেন নৌবাহিনীর প্রধান এবং একাধিক মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।
দেশে ফেরার মধ্য দিয়ে শুধু জুবাইদা রহমানের দীর্ঘ প্রবাসজীবনের অবসানই নয়, নতুন করে আলোচনায় এসেছে দেশের রাজনীতিও। অনেকে মনে করছেন, তাঁর প্রত্যাবর্তন ভবিষ্যতে বিএনপির রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।