
মুদাফফরগঞ্জে শতবর্ষী রাস্তা বন্ধে বিএনপি নেতা শরীফের কান্ড!
ব্যক্তিস্বার্থে শতবর্ষী সরকারি রাস্তা বন্ধ রেখে উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন বিএনপি নেতা সৈয়দ শরীফ।
জামাল উদ্দীন স্বপন
কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার মুদাফফরগঞ্জে এখন চলছে সৈয়দ শরীফের দখলদারিত্ব। চাঁদাবাজি, দখল, লুটতরাজসহ বিভিন্ন নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের ফলে এলাকায় বিএনপির জনপ্রিয়তা তলানিতে ঠেকেছে।
সৈয়দ শরীফ হোসেন বহুল আলোচিত লেদু মিয়া চেয়ারম্যানের ভাতিজা। উত্তরাধিকার সূত্রে তিনি এলাকাজুড়ে রামরাজত্ব কায়েম করেছেন। বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য তিনি ‘লেডিকিলার’ হিসেবেও পরিচিত।
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের সময় তিনি আওয়ামী লীগের সাথে হাত মিলিয়ে নিজের স্বার্থসিদ্ধি করেছেন। আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় থেকে ভাইস চেয়ারম্যান মহাব্বত আলী ও শাহীন চেয়ারম্যানকে ম্যানেজ করে সিন্ডিকেট ব্যবসা চালিয়ে গেছেন। মুদাফফরগঞ্জ জেলা পরিষদ মার্কেটের দোকানঘর হাত বদলের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
গত ৫ আগস্টের পর চাঁদাবাজি, ভাঙচুর ও লুটতরাজ চালিয়ে বিপুল অর্থসম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি। তার কারণে এলাকায় টেন্ডার, সিন্ডিকেট ব্যবসা এবং অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজ স্থগিত হয়ে গেছে।
সৈয়দ শরীফ ব্যক্তি স্বার্থে তার বাড়ির সামনে শতবর্ষী একটি সরকারি রাস্তার নির্মাণ কাজ দেড় যুগ ধরে আটকে রেখেছেন। উপজেলা সদর লাকসামের সঙ্গে যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি পাশাপুর, বামন্ডা, ডিমাতলি, হলুদিয়া ও আশপাশের গ্রামের মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে শরীফ সরকারিভাবে স্বীকৃত এই রাস্তার উন্নয়ন কাজে বাধা সৃষ্টি করে সরকারের উন্নয়নের পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছেন।
এই শতবর্ষী রাস্তাটি নির্মাণে বাধা দিয়ে সৈয়দ শরীফ এলাকায় ‘রাস্তা খেকো’ হিসেবে কুখ্যাতি অর্জন করেছেন। পশাপুর মিয়াবাড়ি থেকে বামন্ডা পর্যন্ত পাকা করণের টেন্ডার বহুবার অনুমোদিত হলেও, তার চাঁদাবাজির কারণে কাজ কখনোই শুরু করা সম্ভব হয়নি। আওয়ামী লীগকে ব্যবহার করে তিনি দীর্ঘ ১৭ বছর এই রাস্তার উন্নয়ন বন্ধ রেখেছেন। ভাইস চেয়ারম্যান মহব্বত আলীকে ম্যানেজ করে প্রকল্প থেকে রাস্তার কাজ বাদ দিয়েছেন। এখন বিএনপির ছত্রছায়ায় থেকে এই উন্নয়ন কাজে বাধা দিচ্ছেন।
সম্প্রতি, রাস্তার পুনঃটেন্ডার হলে ঠিকাদাররা কাজ শুরু করেন, তবে আবারও বাধা সৃষ্টি করেন সৈয়দ শরীফ। রাজনৈতিকভাবে তিনি সাবেক এমপি কর্নেল (অব.) আনোয়ার উল আজিমের সমর্থক হওয়ায়, বিএনপির কেন্দ্রীয় শিল্প বিষয়ক সম্পাদক মো. আবুল কালামের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করছেন। এর ফলে বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে এবং দলীয় কোন্দল বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এলাকাবাসী বিএনপির এই নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ। তারা দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে সমাজবিরোধী এই দুর্নীতিবাজ নেতাকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং যৌথ বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন, যাতে শতবর্ষী এই রাস্তার নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা যায়।