
ময়মনসিংহে মাজারের ৫০তম বার্ষিক ওরস ঘিরে উত্তেজনা
ওরসের নামে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ, পুলিশের হস্তক্ষেপে সমঝোতা
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি:
ময়মনসিংহ সদর উপজেলার একটি মাজারের ৫০তম বার্ষিক ওরস অনুষ্ঠানকে ঘিরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় একটি পক্ষ ওরসে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ তুলে মানববন্ধন ও থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। এ পরিস্থিতিতে মাজার কমিটি ও স্থানীয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা আনতে পুলিশ উদ্যোগ নিয়েছে।
ময়মনসিংহ নগর থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার ভাবখালী ইউনিয়নের চকবন পাথালিয়া গ্রামের আউলিয়া বাজারে হজরত শাহ নেওয়াজ আলী ফকির (র.)-এর মাজারে ২৯ থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ওরস অনুষ্ঠিত হবে। তবে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক ও মসজিদের ইমামরা ওরসে শিরক ও বিদাতের অভিযোগ তুলে এর বিরোধিতা করছেন।
স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া ও প্রস্তুতি
১৯ জানুয়ারি স্থানীয় মুসল্লিরা মানববন্ধনের মাধ্যমে ওরস বন্ধের দাবি জানায়। পাশাপাশি তারা থানায় একটি আবেদনও করে। তবে মাজার কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ওরসের প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে।
মাজার কমিটির সদস্য মনির উদ্দিন বলেন, “৫০ বছর ধরে এই ওরস হয়ে আসছে। এবার কিছু লোক এটি বন্ধ করার পাঁয়তারা করছে, কিন্তু আমরা ওরস চালিয়ে যাব।”
ঢাকা থেকে আসা একজন ভক্ত বলেন, “৪০ বছর ধরে এখানে আসছি। এমন পরিস্থিতি আগে দেখিনি। এখানে অন্যায় কিছু হয় না।”
পুলিশের ভূমিকা
উত্তেজনা প্রশমনে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শফিকুল ইসলাম খান দুই পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করেন। মাজার কমিটির পক্ষ থেকে গান-বাজনা ও অসামাজিক কার্যকলাপ না করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
ইত্তেফাকুল উলামার জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোবারক হোসেন বলেন, “আমরা চাই না এখানে মাদক, জুয়া বা গান-বাজনা হোক। প্রশাসন থেকে প্রতিশ্রুতি পেয়েছি, এসব কিছু হবে না।”
পুলিশ জানিয়েছে, ওরস চলাকালীন কোনো বিশৃঙ্খলা যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে পুলিশ নজরদারি করবে।
মাজারের ওরস ঘিরে উত্তেজনা আপাতত প্রশমিত হয়েছে। তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে স্থানীয় প্রশাসন সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।