
মার্কিন সহায়তা স্থগিত: বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পে সম্ভাব্য প্রভাব
যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তা স্থগিতাদেশে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও রোহিঙ্গা সহায়তা প্রকল্পে অনিশ্চয়তা
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন সম্প্রতি বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি তিন মাসের জন্য স্থগিত করার নির্বাহী আদেশ জারি করেছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশে মার্কিন অর্থায়নে চলমান বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ বা স্থগিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে কিছু প্রতিষ্ঠান তাদের প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মীদের হোম অফিস করার নির্দেশ দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তার একটি বড় অংশ আসে ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) এর মাধ্যমে। বাংলাদেশে ইউএসএআইডি খাদ্য নিরাপত্তা ও কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, গণতন্ত্র ও শাসনব্যবস্থা, পরিবেশ ও জ্বালানি এবং মানবিক সহায়তা খাতে কাজ করে আসছে। এছাড়া, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জরুরি সহায়তায়ও তারা ভূমিকা পালন করে।
ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ জানিয়েছেন, বাংলাদেশে মার্কিন অর্থায়নের ছয়টি প্রকল্প স্থগিত করা হয়েছে, যার মধ্যে তিনটি সরাসরি ব্র্যাক বাস্তবায়ন করে এবং বাকি তিনটি অন্য এনজিওর মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছিল। এতে অন্তত সাড়ে তিন লাখ মানুষ এই সহায়তা থেকে বঞ্চিত হবেন।
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আইনুল ইসলাম মনে করেন, এই স্থগিতাদেশ প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এবং ছোট উদ্যোক্তাদের ওপর সরাসরি আঘাত হানবে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জন্য একটি অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।
তবে, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ আশাবাদী যে, তিন মাসের পর্যালোচনার সময়ে প্রকল্পগুলোকে যথাযথভাবে উপস্থাপন করে পুনরায় চালু করা যেতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন, প্রান্তিক মানুষের জীবনমানের অবনমন আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়েও অশান্তির কারণ হতে পারে, যা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থকেও বিঘ্নিত করবে।
মার্কিন সহায়তা স্থগিতাদেশের ফলে বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠতে সংশ্লিষ্ট সকলকে সমন্বিত প্রচেষ্টা চালাতে হবে।