
নোয়াখালীতে হাসপাতাল ডিজিটাল সাইনবোর্ডে আওয়ামী লীগ আবার ভয়ংকর রূপে ফিরবে বার্তা নিয়ে হাসপাতাল হামলা ও ভাঙচুর
নিজস্ব প্রতিবেদক, নোয়াখালী
“আওয়ামী লীগ আবার ভয়ংকর রূপে ফিরবে; জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু”—এমন বার্তা নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের ডিজিটাল সাইনবোর্ডে ভেসে উঠলে সেখানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরের হাসপাতাল সড়কের ‘সিটি হসপিটাল’-এ এই হামলার ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সূত্রে জানা যায়, এ হামলায় জড়িত ব্যক্তিরা বিএনপির সহযোগী সংগঠন যুবদল ও ছাত্রদলের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
হাসপাতালের কর্মীরা জানান, এ ঘটনায় রোগী ও তাঁদের স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর একটি দল এবং সুধারাম থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সেনাবাহিনীর সদস্যরা মো. বাবলু (৩৫) নামের একজনকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। তাঁকে আজ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত
সিটি হাসপাতালের ব্যবস্থাপক নাজিম উদ্দিন জানান, কয়েক দিন আগে গভীর রাতে হাসপাতালের প্রবেশপথে থাকা ডিজিটাল সাইনবোর্ডে উল্লিখিত বার্তাটি ভেসে ওঠে। কারা বা কীভাবে এটি আপলোড করেছে, তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানে না। বিষয়টি জানার পর তিনি সাইনবোর্ডের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।
গতকাল রাতে যুবদল ও ছাত্রদলের একটি দল হাসপাতালে এসে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। নাজিম উদ্দিন জানান, তিনি তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, হাসপাতালের কেউ এর সঙ্গে জড়িত নয়। কিন্তু তাদের অনুরোধে সাইনবোর্ডের বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করার পর আবার বার্তাটি ভেসে ওঠে। এরপর হামলাকারীরা হাসপাতালের বিভিন্ন অংশে ভাঙচুর চালায়।
হাসপাতালের ক্ষয়ক্ষতি
হামলার ফলে ডিজিটাল সাইনবোর্ড, ব্যবস্থাপকের কক্ষ, এক্স-রে রুমের কম্পিউটার, জরুরি বিভাগের চিকিৎসকের কক্ষ, ওষুধের দোকান, এবং সামনে থাকা একটি অ্যাম্বুলেন্সসহ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করা হয়। ক্যাশ কাউন্টার থেকে টাকা এবং ওষুধও লুট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

যুবদলের বক্তব্য
জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন খান বলেন, ডিজিটাল স্ক্রিনে প্রচারিত বার্তার প্রতিবাদ জানাতে কর্মী-সমর্থকেরা গিয়েছিলেন। তবে কয়েকজন অতি উৎসাহী ব্যক্তি ভাঙচুরে জড়িত হতে পারে। পরে দলীয় নেতাকর্মীরাই তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেন।
পুলিশের বক্তব্য
সুধারাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু তাহের জানান, হামলার খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় আটক ব্যক্তিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এখনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।