
শুল্ক-কর বৃদ্ধির অধ্যাদেশ প্রত্যাহারের দাবি নাগরিক কমিটির: জাতীয় অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে বিকল্প প্রস্তাব
জাতীয় নাগরিক কমিটি শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর শুল্ক-কর বৃদ্ধির অধ্যাদেশ অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে দাবি করেছে সংগঠনটি।
মূল্য সংযোজন কর ও শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের প্রভাব
সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে শতাধিক পণ্যে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) এবং সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি করেছে। জাতীয় নাগরিক কমিটি মনে করে, এই সিদ্ধান্ত মূল্যস্ফীতি বাড়িয়ে দেবে এবং ব্যবসার খরচ বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির জীবনযাত্রা ব্যাহত হবে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন সংবাদ সম্মেলনে জানান, রাজস্ব বৃদ্ধি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হলেও, তা যেন সাধারণ মানুষের জীবনমানের ক্ষতি না করে।
অবৈধ সরকারের ঋণ ও আইএমএফের শর্ত
লিখিত বক্তব্যে আখতার হোসেন উল্লেখ করেন, পূর্ববর্তী সরকারের দুর্নীতি এবং বৈদেশিক মুদ্রা পাচারের কারণে দেশের অর্থনীতি ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত মেনে কর বাড়ানোর বর্তমান সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে নাগরিক কমিটি।
আখতার হোসেন বলেন, “গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত সরকার কোনো অবৈধ সরকারের ঋণশর্ত মেনে চলতে পারে না।”
অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে প্রস্তাবনা
নাগরিক কমিটি ভ্যাট ও শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের পরিবর্তে রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য নিম্নলিখিত বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে:
- প্রত্যক্ষ করের আওতা বৃদ্ধি:
প্রত্যক্ষ কর বাড়ালে সাধারণ মানুষের ওপর সরাসরি চাপ পড়বে না। - বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনা:
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের শ্বেতপত্র অনুযায়ী, গত ১৫ বছরে ২৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচার হয়েছে। তা দেশে ফেরাতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দিয়েছে কমিটি। - খেলাপি ঋণ আদায় ও সম্পত্তি ক্রোক:
ব্যাংকিং খাতের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে দ্রুত অর্থঋণ ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুপারিশ করেছে সংগঠনটি। - টিসিবি ট্রাক সেল চালু:
সাধারণ মানুষের স্বস্তি নিশ্চিত করতে টিসিবির মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রি শুরু করার দাবি জানিয়েছে তারা।
শেষ কথা
জাতীয় নাগরিক কমিটি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, কর বৃদ্ধির পরিবর্তে নীতি সংস্কার ও দুর্নীতি দমনের মাধ্যমে রাজস্ব বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে।