কুয়েট অচলাবস্থা: তদন্তে বাধা, সামাজিক মাধ্যমে উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা — প্রশাসনের উদ্বেগ

কুয়েট সংঘর্ষ ও তদন্ত নিয়ে প্রশাসনের অভিযোগ এবং শিক্ষার্থীদের অবস্থান
The short URL of the present article is: https://bangavumi.com/mgjq

কুয়েট অচলাবস্থা: তদন্তে বাধা, সামাজিক মাধ্যমে উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা — প্রশাসনের উদ্বেগ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দাবি, তদন্তকে প্রভাবিত করতে একটি মহল বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়িয়ে শিক্ষার্থীদের উস্কে দিচ্ছে।

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) চলমান অচলাবস্থা ও সংঘর্ষের ঘটনার তদন্ত প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টির চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, কিছু শিক্ষার্থী ও স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্তিকর তথ্য ও উস্কানিমূলক বক্তব্য ছড়িয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে আন্তরিকভাবে কাজ করছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু দাবি কার্যকর করা হয়েছে এবং অবশিষ্ট দাবিগুলোর ব্যাপারেও সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো সক্রিয় রয়েছে।

কুয়েট প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, ১৮ ফেব্রুয়ারি সংঘর্ষের পর ৯৯তম সিন্ডিকেট সভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ক্যাম্পাসের সকল একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয় এবং আবাসিক হলসমূহ খালি করে সিলগালা করা হয়।

তবে আগামী ১৫ এপ্রিল থেকে প্রশাসনিক কার্যক্রম পুনরায় চালু করার কথা বলা হলেও একাডেমিক কার্যক্রম এখনই চালু হচ্ছে না। এই বিষয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ধৈর্য ধরার অনুরোধ জানিয়েছে প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের কর্মকর্তার মাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, একটি মহল ইচ্ছাকৃতভাবে আইন ভেঙে ১৩ এপ্রিল হলে প্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে, যার লক্ষ্য হচ্ছে তদন্তকে ব্যাহত করা এবং ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা বজায় রাখা।

অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দিয়েছেন, রোববার (১৩ এপ্রিল) সকলে ক্যাম্পাসে ফিরে হলে উঠবেন। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে—এ ধরনের অপতৎপরতায় শিক্ষার্থীদের প্রভাবিত না হওয়ার জন্য।

প্রশাসন সকলকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে তদন্ত কমিটি নিরলসভাবে কাজ করছে এবং আগামী ১৩ এপ্রিলের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। পরদিন শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনসহ একাডেমিক ভবনগুলো তালাবদ্ধ করে দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সবধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয় এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে রাতেই ৪০০ থেকে ৫০০ অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করে প্রশাসন। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা খুলনা থেকে ঢাকায় গিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেন, যেখানে উপাচার্যের পদত্যাগসহ মোট ছয়টি দাবি উত্থাপন করা হয়।

ক্যাম্পাসে পুনরায় স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনতে প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই মুহূর্তে উত্তেজনা বিরাজ করছে, তবে সকল পক্ষকেই সংযম ও শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সংকট নিরসনের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from DAILY BANGAVUMI

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading